মানব দেহের সংবহনতন্ত্র – ২০+ প্রশ্ন ও উত্তর | Circulatory System of Human Body MCQ [PDF]

মানব দেহের সংবহনতন্ত্র – ২০+ প্রশ্ন ও উত্তর | Circulatory System of Human Body MCQ [PDF] Read More »

মানব দেহের সংবহনতন্ত্র – ২০+ প্রশ্ন ও উত্তর | Circulatory System of Human Body MCQ [PDF]
মানব দেহের সংবহনতন্ত্র – ২০+ প্রশ্ন ও উত্তর

মানব সংবহনতন্ত্র – প্রশ্ন ও উত্তর

❑ প্রাণীদেহে সংবহন তন্ত্র দুই প্রকার যথা- ১৷ রক্ত সংবহন তন্ত্র , ২৷ লসিকা সংবহন তন্ত্র

        রক্ত সংবহন তন্ত্র - রক্ত সংবহনে সহায়ক যন্ত্র গুলি মিলিত হয়ে যে তন্ত্র গঠন করে তাকে রক্ত সংবহন তন্ত্র বলে।

◾রক্ত সংবহন তন্ত্রের প্রকারভেদ

প্রাণীদেহে প্রধানত দু রকমের রক্ত সংবহন তন্ত্র দেখা যায়। যথা ১৷ মুক্ত সংবহন তন্ত্র (open vascular system ) , ২৷ বদ্ধ সংবহন তন্ত্র (closed vascular system)

১৷ মুক্ত সংবহন তন্ত্র - যে সংবহন তন্ত্রে রক্ত কেবল মাত্র রক্ত বাহের মধ্যে আবদ্ধ না থেকে দেহ গহ্বর বা সেলম নামে ফাঁকা স্থানে মুক্ত হয়ে থাকে তাকে মুক্ত সংবহন তন্ত্র বলে। যেমন চিংড়ি মাছের সংবহন তন্ত্র

২৷ বদ্ধ সংবহন তন্ত্র - যে সংবহন তন্ত্রে রক্ত সবসময় রক্তবাহে এবং হৃৎপিণ্ডের মধ্যে আবদ্ধ ভাবে সংবাহিত হয় কিন্তু কখনই দেহ গহ্বরে মুক্ত হয় না সেই সংবহন তন্ত্রকে বদ্ধ সংবহন তন্ত্র বলে। যেমন কেঁচো, মানুষের সংবহন তন্ত্র।

৩। সিস্টেমিক সংবহন - এই সংবহন হৃৎপিণ্ড এবং দেহকোষের মধ্যে ঘটে, অর্থাৎ হৃৎপিণ্ড থেকে রক্ত ধমনীর মাধ্যমে দেহকোষের জালকে ছড়িয়ে পড়ে এবং দেহকোষের জালক থেকে শিরার মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে।

৪। পোর্টাল সংবহন - এই রকম সংবহনে হৃৎপিণ্ড থেকে রক্ত বিভিন্ন ধমনীর মাধ্যমে পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, প্লীহা ও অন্ত্রের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ঐ সব অংসের জালক থেকে রক্ত পোর্টাল শিরার মাধ্যমে যকৃতে অবস্থিত জালকে আসে। যকৃৎ থেকে রক্ত হেপাটিক শিরার মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে।

◾রক্ত সংবহন তন্ত্রের বিভিন্ন উপাদান গুলি পারস্পরিক সম্পর্ক কি ?

❑ রক্ত সংবহন তন্ত্রের উপাদান গুলি হল ::

১৷ হৃৎপিণ্ড

২৷ রক্ত

৩৷ রক্তবাহ ধমনী, শিরা ও জালক।

◾নিম্নে রক্ত সংবহন তন্ত্রের উপাদান গুলির মধ্যে পারস্পরিক আলোচনা করা হল।

১৷ হৃৎপিণ্ড অনবরত নির্দিষ্ট ছন্দময় গতিতে পাম্প করে রক্তকে সারা দেহে সঞ্চালিত করে।

২৷ হৃৎপিণ্ডের সংকোচনের সময় রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে ধমনীর মাধ্যমে সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে।

৩৷ হৃৎপিণ্ড যখন প্রসারিত হয় তখন দেহের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্ত শিরার মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে।

৪৷ ধমনী ও শিরা পরস্পরের মধ্যে জালকের সাহায্যে সংযোগ স্থাপন করে।

সুতরাং প্রাণীদেহের রক্ত সংবহনে হৃৎপিণ্ড, শিরা, ধমনী, জালক এবং রক্ত সম্মিলিতভাবে অংশগ্রহণ করে।

মেরুদণ্ডী প্রাণীর শরীরে রক্ত প্রবাহের কারণ কি ?

মেরুদণ্ডী প্রাণীর দেহে প্রধান সংবহন মাধ্যম হল রক্ত। হৃৎপিণ্ড পাম্পের ন্যায় কাজ করে দেহের বিভিন্ন অংশে রক্ত প্রবাহ ঘটায়। রক্ত প্রবাহের উদ্দেশ্য গুলি হল

১৷ প্রাণীদেহে পৌষ্টিক নালি থেকে শোষিত তরল খাদ্য উপাদান রক্তের মাধ্যমে সজীব কোষে পৌঁছায়।

২৷ রক্তের মাধ্যমে শ্বাস অঙ্গ থেকে অক্সিজেন প্রতিটি কলা কোষে পৌঁছায় এবং প্রতিটি কলা কোষে উৎপন্ন কার্বন ডাই অক্সাইড রক্তের মাধ্যমে শ্বাস অঙ্গে পৌঁছায়।

৩৷ বিভিন্ন অন্তক্ষরা গ্রন্থি থেকে উৎপন্ন হরমোন রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন কোষে পৌঁছায়।

৪৷ কোষে বিপাক জাত বর্জ্য পদার্থ রক্তের মাধ্যমে রেচন অঙ্গে পৌঁছায়।

৫৷ রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন কোষ সরাসরি রোগ জীবাণু কে ধ্বংস করে দেহের সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

ধমনী কেটে গেলে ফিনকি দিয়ে কিন্তু শিরা কেটে গেলে গলগল করে রক্ত বের হয় কেন ?

ধমনীর প্রাচীর পুরু ও গহ্বর ছোটো হয় এবং ধমনীর মধ্যে দিয়ে রক্ত বেগে প্রবাহিত হয়। এর ফলে ধমনীতে রক্তের চাপ খুব বেশি থাকে তাই ধমনী কেটে গেলে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হয়।

অপর দিকে শিরার প্রাচীর পাতলা ও গহ্বর বড় হয় এবং শিরার মধ্যে দিয়ে রক্ত ধীরে প্রবাহিত হয়। এর ফলে শিরাতে রক্তচাপ কম থাকে তাই শিরা কেটে গেলে গলগল করে। রক্ত বের হয়।

রক্তচাপ কাকে বলে ? ইহা কয় প্রকার ও কি কি ? এক জন সুস্থ স্বাভাবিক ব্যক্তির ক্ষেত্রে রক্ত চাপ কত ? রক্তচাপ পরিমাপক যন্ত্রটির নাম কি ? মানব দেহের কোন ধমনীতে রক্ত চাপ মাপা হয় ?

রক্তচাপ রক্তবাহের মধ্যে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার সময় রক্তবাহের প্রাচীরে যে পার্শ্বীয় চাপ দেয় তাকে রক্তচাপ বলে।

     রক্তচাপ দুই রকমের ১৷ সিস্টোলিক চাপ ২৷ ডায়াস্টোলিক চাপ

১৷ সিস্টোলিক চাপ হৃৎপিণ্ড যখন সংকুচিত অবস্থায় বা সিস্টোল অবস্থায় থাকে তখন যে সর্বাধিক চাপ সৃষ্টি করে তাকে সিস্টোলিক চাপ বলে। চাপ 120-130 ।

২৷ ডায়াস্টোলিক চাপ হৃৎপিণ্ড যখন শিথিল অবস্থায় থাকে অর্থাৎ ডায়াস্টোল অবস্থায় থাকে তখন যে চাপসৃষ্টি করে তাকে ডায়াস্টোলিক চাপ বলে। চাপ 70-90 ।

      রক্ত চাপ মাপক যন্ত্রটি হল স্ফিগমোম্যানোমিটার (Sphgmomanometer)। ব্রাকিয়াল ধমনীতে (Brachial Artery) মানুষের রক্ত চাপ নির্ণয় করা হয়।

[✓দেওয়া রইলো মানব সংবহনতন্ত্র সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর।]

1. কে সর্বপ্রথম কপাটিকা গুলির কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করেন?
– স্যান্ডউইচ
– রোজালিন ফ্রাঙ্ক
– উইলিয়াম হার্ভে
– লিউয়েনহুক

2. অলিন্দের প্রসারন কাল কত সময় স্থায়ী হয়?
– 0.5 sec
– 0.4 sec
– 0.7 sec
– 0.3 sec

3. কখন দ্বিতীয় হৃৎধ্বনি শোনা যায়?
– নিলয়ের প্রসারন
– অলিন্দের প্রসারন
– নিলয়ের সংকোচন
– অলিন্দের সংকোচন

4. হৃৎপিন্ডের আবরনকে কী বলে?
– এন্ডোকার্ডিয়াম
– হৃৎ্ধরাঝিল্লি
– ক্যাপসুল
– প্লুরা

5. সাধারণ ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম কয়টি তরঙ্গ নিয়ে গঠিত?
– 5 টি
– 4 টি
– 2 টি
– 3 টি

6. করোনারি ধমনি কার সাথে যুক্ত থাকে?
– বাম অলিন্দ
– বাম নিলয়
– ডান অলিন্দ
– ডান নিলয়

7. নিম্নের কোনটি সংবহনতন্ত্রের গোলযোগ নয়?
– ডোয়ারফিজম
– অ্যাথেরোস্ক্রেরোসিস
– হার্ট অ্যাটার্ক
– হাইপার টেনশন

8. হৃৎস্পন্দনের হার ও হৃৎচক্রের সময়ের সম্পর্ক কি?
– সমান
– ব্যস্তানুপাতিক
– সমানুপাতিক
– বর্গের সমানুপাতিক

9. একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ঘাত পরিমাণ কত?
– 70 মিলিলিটার
– 60 মিলিলিটার
– 55 মিলিলিটার
– 65 মিলিলিটার

10. মানুষের সংবহনতন্ত্রের মূল উপাদান কয়টি?
– 3 টি
– 4 টি
– 5 টি
– 2 টি

11. মাইট্রাল ভালব(Mitral valve) অবস্থিত—
– বাম অলিন্দ ও বাম নিলয়
– বাম অলিন্দ ও ডান নিলয়
– ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়
– ডান অলিন্দ ও বাম নিলয়

12. নিম্নের কে হৃৎপিন্ডকে বিনা বাধায় সংকুচিত ও প্রসারিত হতে সাহায্য করে?
– এন্ডোকার্ডিয়াম
– পেরিকার্ডিয়াল তরল
– এপিকার্ডিয়াম
– মায়োকার্ডিয়াম

13. রক্তবাহ কয় প্রকারের?
– 3 প্রকার
– 4 প্রকার
– 5 প্রকার
– 2 প্রকার

14. মহিলাদের হৃৎপিন্ডের ওজন দেহ ওজনের কত শতাংশ?
– 0.38 %
– 0.35 %
– 0.45 %
– 0.40 %

15. নিম্নের কার আকৃতি ত্রিকোনাকার পিরামিডের মতো?
– ডান নিলয়
– বাম নিলয়
– ডান অলিন্দ
– বাম অলিন্দ

16. নিম্নের কে হৃৎ-কপাটিকা(Heart Valves) তৈরি করে?
– এপিকার্ডিয়াম
– এন্ডোকার্ডিয়াম
– পেরিকার্ডিয়াল তরল
– মায়োকার্ডিয়াম

17. নিম্নের কোনটি দ্বৈত সংবহনের তাৎপর্য নয়?
– এই সংবহনের পথ সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘ
– ডি অক্সিজেনেটেড ব্লাড অধিক কার্বন ডাইঅক্সাইড বহন করে
– অক্সিজেনেটেড ব্লাড অধিক কার্বন ডাইঅক্সাইড বহন করে
– এটি অক্সিজেনেটেড ও ডি অক্সিজেনেটেড রক্তের মিশ্রণে বাধা দেয়

18. হৃৎপিন্ডের সম্মুখ তলটি কোথায় অবস্থান করে?
– মধ্যচ্ছদার দিকে
– অস্থি পাঞ্জরের দিকে
– মেরুদন্ডের দিকে
– স্টারনামের দিকে

19. কোন হরমোন হৃৎকার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে?
– অ্যাড্রেনালিন
– থাইরয়েড
– হাইপোথ্যালামাস
– পিটুইটারি

20. প্রতি হৃৎচক্রে কয়টি ঘটনা পর্যায়ক্রমে সংঘটিত হয়?
– 2 টি
– 6 টি
– 3 টি
– 4 টি

21. হৃৎপিন্ডের গহ্বর কয়টি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত?
– 6 প্রকোষ্ঠ
– 2 প্রকোষ্ঠ
– 4 প্রকোষ্ঠ
– 3 প্রকোষ্ঠ

22. ইউস্টেচিয়ান কপাটিকা অবস্থান করে—-
– ডান নিলয় ও ফুসফুসীয় ধমনির সংযোগস্থলে
– করোনারী সাইনাস ও ডান অলিন্দের সংযোগস্থলে
– বাম নিলয় ও মহা ধমনীর সংযোগস্থলে
– নিম্ন মহা শিরা ও ডান অলিন্দের সংযোগস্থলে